প্রত্যয় নিউজডেস্ক: ঢাকার নবাবগঞ্জ থানা হাজতের টয়লেটের ভেতর থেকে হত্যা মামলার এক আসামির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম মামুন হোসেন (৩১)।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে হাজতের টয়লেটের ভেতরের গ্রিলের সঙ্গে লুঙ্গি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ জানান, রোববার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের দেওতলা খ্রিস্টানপাড়া গ্রামের একটি নির্জন স্থানের বাঁশ বাগান থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তার পরিচয় মেলে। দুই সন্তানের জননী ওই নারীর নাম রাজিয়া সুলতানা (৩৫)। তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার লস্করপুর গ্রামের প্রবাসী ইয়াকুব ঢালীর স্ত্রী।
তিনি বলেন, লাশ উদ্ধারের পর প্রাথমিক তদন্তে ওই নারীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে সন্দেহে সেদিনই পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ওই নারীর লাশ উদ্ধারের সংবাদ তাৎক্ষণিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মামুনকে আটক করে পিটুনি দিয়ে শ্রীনগর থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করে গ্রামের বাসিন্দারা
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নবাবগঞ্জ থানা পুলিশকে অবগত করা হলে তারা আমাদের হেফাজতে দিয়ে দেয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কথাবার্তায় ব্যাপক অসঙ্গতি পাওয়া যায়। পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দুপুরে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল। এ সময় মামুন হাজতের টয়লেটে গিয়ে ভেতর থেকে লক করে গ্রিলের সঙ্গে গলায় লুঙ্গি পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এর প্রমাণ থানার সিসি ক্যামেরায় স্পষ্ট রয়েছে।
প্রাথমিক তদন্ত ও লস্করপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে ওসি আরও জানান, নিহত ওই নারীর সঙ্গে মামুনের বাবা আবুলের পরকিয়ার সম্পর্ক ছিল। ওই নারীর সঙ্গে নগ্ন ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন আবুল। এ নিয়ে শত্রুতার জের ও বাবার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে রাগে-ক্ষোভে মামুনই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, যে গ্যারেজে অটোরিকশা রাখা ছিল ঘটনার দিন রাতে মামুনই গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা বের করেছিলেন বলে আমরা প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পেয়েছি। সুতরাং মামুনই রাজিয়াকে হত্যা করে লাশ ওই নির্জন স্থানের বাঁশ বাগানে ফেলে গিয়েছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
মামুনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।